রবিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

২৫ ই আমার মৃত্যু: বাংলাদেশ

 ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি, সকাল নয়টা। পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী দরবারে সবাই হাজির। কোনোকিছু বুঝে ওঠার আগেই বিদ্রোহী বিডিআর সদস্যরা তাণ্ডব চালান পিলখানায়। প্রাণ হারান ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন। দেশের ইতিহাসের বর্বরতম এই হত্যাকাণ্ডের আট বছর পূর্ণ হলো।

বিভীষিকাময় এই হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া আর বিচারের গতি নিয়ে কেউ কোনো প্রশ্ন না তুললেও, বিদ্রোহের নেপথ্য কারণ নিয়ে রয়েছে সংশয়। নিহতদের পরিবারগুলো মূল পরিকল্পনাকারীদের সম্পর্কে জানতে চায়। 

হত্যাকাণ্ডে শহীদ মেজর মামুনের বাবা মুজিবুর রহমান আমাদের বলেন, এই যন্ত্রণা বয়ে বেড়ানো কঠিন, তবু আজও জানতে পারলাম না, কারা ছিলো পরিকল্পনাকারী, কী ছিলো আমার ছেলের অপরাধ?

নিহত তত্কালীন বিডিআর প্রধান মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের ছোটভাই শফিক আহমেদ সুইট বলেন, আমরা পরিবারের সবাই মিলে কবর জিয়ারত করতে যাবো। দোয়া করা ছাড়া আমরা আর কিই-বা করতে পারবো। 

নজিরবিহীন এ হত্যাকাণ্ডে বিদ্রোহীদের হাতে বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ ও তার স্ত্রী নিহত হন। রেহাই পাননি তাদের বাড়িতে বেড়াতে আসা আত্মীয়রা ও কাজের মেয়েও।

বিদ্রোহের পর বিডিআরের নিজস্ব ও ফৌজদারি- এই দুই আইনে বিচার শুরু হয়।

বিজিবি স‍ূত্রে জানা যায়, বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় অভিযুক্তসহ ১৭ হাজার ৩শ ১১ জনকে বিচারের মুখোমুখি করা হয়। এর মধ্যে ছয় হাজার ৪১ জনকে বিশেষ আদালত এবং ১১ হাজার ২শ ৬৫ জনকে অধিনায়ক সামারি কোর্টে বিচার করা হয়। আসামিদের মধ্যে নয় হাজার ১৯ জনকে বিভিন্ন সাজাসহ চাকরিচ্যুত করা হয়। বাকি আট হাজার ২শ ৮৭ জনকে সরাসরি বিদ্রোহে সম্পৃক্ত না থাকায় তাদের লঘু দণ্ড দিয়ে চাকরিতে বহাল রাখা হয়েছে। 

পাশাপাশি হত্যা মামলায় অভিযুক্ত আসামিদের ৮শ ৫০ জনের মধ্যে ১শ ৫২ জনকে ফাঁসি, ২শ ৬০ জনকে যাবজ্জীবন ও ২শ ৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। এছাড়া ২০ জন আসামি পলাতক রয়েছে। আবার ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ডিএডি রহিম কারাগারে মারা গেছে।

এখন উচ্চ আদালতে ডেথ রেফারেন্সের শুনানি চলছে। গত বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ৩৫৯তম দিনের শুনানি হয়। মামলায় ১শ ৫২ আসামির ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আসামিদের করা আপিলের ওপর শুনানি আগামী ০২ এপ্রিল পর্যন্ত মুলতবি করেছেন হাইকোর্ট।

নারকীয় এই হত্যাকাণ্ডের পর এই বাহিনীতে সঙ্কট তৈরি হয়েছিল কিনা জানতে চাইলে বিজিবি’র বর্তমান মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন বলেন, বর্তমানে বাহিনীতে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে এসেছে। সঙ্কট যা ছিলো তা এখন আমরা কাটিয়ে উঠেছি। আমরা জনগণের আস্থাশীল বাহিনী ছিলাম, আর এখনও আছি।  

তিনি আরও বলেন, এখন আমরা যারা পরিচালনার দায়িত্বে আছি, বাহিনীর প্রতিটি স্তরেই কঠোর শৃঙ্খলা ও মনিটরিং করছি এবং সুশৃঙ্খলভাবে বাহিনীকে পরিচালনা করে যাচ্ছি।

বুধবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০১৭

শিবিরের অফিস থেকে বিপুল পরিমান জঙ্গি বই উদ্ধার!

খবরঃ শিবিরের অফিস থেকে বিপুল পরিমান জঙ্গি বই উদ্ধার!
-----------------

সাংবাদিকঃ জঙ্গি বইয়ের তালিকায় কোন কোন বই ছিল?

পুলিশ অফিসারঃ কয়েক হাজার ক্যালেন্ডার ছিল...

সাংবাদিকঃ ক্যালেন্ডার জঙ্গি বই হয় কিভাবে?

পুলিশ অফিসারঃ দেখেন প্রতি মাসে ৪ দিন করে লাল কালিতে লেখা, মানে ঐদিন তারা নাশকতার পরিকল্পনা করছিল..

সাংবাদিকঃ দেখি দেখি, আরে এতো শুক্রবার, লাল কালি দিয়ে ছুটির দিন বুঝানো হইছে....

পুলিশ অফিসারঃ দেখেন এখানে এক নাগাড়ে ৫ দিন লাল দাগ দেওয়া, একটানা কী শুক্রবার আসে?

সাংবাদিকঃ দেখি, আরে এটাতো জুলাই মাস, ঈদুল ফিতরের ৫ দিন ছুটি....

পুলিশ অফিসারঃ কনষ্টেবল,
এই শালারেও ধর, এইটাও জঙ্গি।

প্রতি মুহুর্তের ব্রেকিং পেতে ফেসবুক পেজে লাইক দিন: সময়ের সাহসী কন্ঠস্বর

শুক্রবার, ৬ জানুয়ারী, ২০১৭

একজন মিডিয়া কর্মী হিসেবে মীর কাসেমকে যেমন দেখেছি

একজন মিডিয়া কর্মী হিসেবে মীর কাসেমকে যেমন দেখেছি

বাংলাদেশের যুদ্ধপরাধ নামক বিচার না কি প্রহসণ! কিংবা রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক!! এসব বিতর্কে আমি যাবো না। কারণ একের পর এক ‘ফাঁসি কার্যকর’ শেষে ‘নৃত্য আর মৃত্যুকে ঘিরে উল্লাস’; এসব নিয়েও নানা কথা বলতে লজ্জা লাগে। যদিও স্বাধীনতার আগে ও পরে বিভিন্ন হত্যাকান্ডের পর লাশ নিয়ে তামাশা হয়েছিল। নিজের চোখে লগি-বৈঠার তান্ডবে লাশের ওপর নৃত্য এসবও দেখতে হয়েছে। আমাদের মত অভাগা ( চেতনার তেলে উজ্জীবিত) জাতিকে আরো কত কি দেখতে হবে! কে জানে। এসব চিন্তা করলে ঘুম আসে না। অব্যাহত ভাবে সামাজিক ও মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের মধ্যে ইসলামিক চিন্তা শক্তির প্রয়োগের বিপরীতে চলছে ইসলামকে অবজ্ঞা করার অসুস্থ প্রতিযোগিতা।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে এসবের সাথে (একবিংশ শতাব্দিতে) যুক্ত হয়েছে একেকটি বিচারের রায় আর দন্ড কার্যকর। ইলেকট্রনিক মিডিয়ার শত শত নিউজ আওয়ার ব্যয় আর লাখো কোটি পত্রিকার পাতা খরচ। দ্যটস ইট। এছাড়া, ট্রাইব্যুনালের রায়েরর পর সর্বোচ্চ আদালতের রায় আপিল/রিভিউ বহাল এবং ট্রাইব্যুনালের স্বাক্ষি ও নথিপত্রের নানা জটিলতা তথ্যে গড়মিল নিয়ে প্রধান বিচারপতির তিরস্কার! এত কিছুর পরও চাই লাশ!! আসামী পক্ষের অভিযোগ এসব হচ্ছে বিচারিক হত্যাকান্ড। আমাদের কি বলা আছে?

কাদের মোল্লা/কামারুজ্জামান/নিজামী’র ফাঁসি আর অধ্যাপক গোলাম আযমের মৃত্যুর পর জামায়াতের অন্যতম শীর্ষ নেতা হিসেবে বিবেচিত মীর কাসেম আলী। যিনি ইসলামি ব্যাংক/ইবনে সিনা/রাবেতা’সহ অসংখ্য সামাজিক প্রতিষ্ঠান গড়ার কারিগর। একই সাথে দেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ মিডিয়া করপোরেশনের কারিগরও ছিলেন। সেসব আলোচনায় নাই বা গেলাম। লিখে শেষ করা যাবে না। যেহেতু আমি মিডিয়া কর্মী। বলতে পারি একটি আলোচনার অন্যতম শ্রোতা/প্রশ্নের উত্তরদাতা হিসেবে আমার দেখা ও শোনার সেই দিনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো।

তার আগে চলে যাচ্ছি মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকর ইস্যুতে পরিবারের অনুভূতি প্রসঙ্গে। বাংলাদেশ সময় শনিবার রাত সাড়ে ১০টার পর যখন মীর কাসেম আলীর ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়। একটু পরে দেখলাম, মীর কাসেম আলীর মেয়ে’র একটা স্ট্যাটাস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরালে রূপ নিয়েছে।

খবরের মাধ্যমে জানতে পারি; শনিবার দন্ড কার্যকরের একদিন আগে তথা শুক্রবার কাশিমপুর কারাগারে মীর কাসেম আলীর সাথে সবশেষ দেখা করেন পরিবারের সদস্যরা। বাবার সাথে শেষ দেখা করে তাঁর দুই মেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তথা ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন।

মীর কাসেম আলীর মেয়ে সুমাইয়া রাবেয়া লিখেছেন- “আমার আব্বু নরম মনের মানুষ। প্রতিবার বক্তব্য দিতে উঠলে কেঁদে ফেলতেন। এটা সবাই জানেন। এর আগে যখন দেখা করতে গিয়েছিলাম তখন আব্বুর চেহারায় বিন্দুমাত্র বিচলতা দেখিনি, বরং সবার সাথে হাসি খুশি ছিলেন। তখন বাবাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ‘আব্বু’ আমাদের ভাইবোনের জন্য আল্লাহর কাছে জান্নাতের সুপারিশ করবানা?” সুমাইয়া রাবেয়া লিখেন, “আব্বু একগাল হেসে বললেন, শুধু তোমরা না, আমার নাতি-নাতনী, বউমা, জামাই সবার জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশ করব। আমরা সবাই হেসে দিয়েছিলাম।” আবেগ জড়িত লিখনীতে সুমাইয় লেখেন, “আজকে (২সেপ্টেম্বর-শুক্রবার) আবার আব্বুকে দেখতে যাচ্ছি। শেষবারের মত। কাল আব্বু থাকবেনা এ নিয়ে আমরা দুঃখিত নই। শাহাদাতের মর্যাদা কজনের ভাগ্যে জোটে? এ মৃত্যুর জন্যই তো সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আল্লাহ আমার আব্বুকে কবুল করে নিন।”

আর মীর কাসেম আলীর অপর মেয়ে তাহেরা তাসনিম ফেসবুকে কয়েকটি ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, “সবাই আমার বাবা মীর কাসেম আলীর জন্য দোয়া করবেন। যেন তিনি জান্নাতুল ফেরদৌসের বাসিন্দা হতে পারেন!”

আমি মীর কাসেম আলীর মেয়ে ‘সুমাইয়া রাবেয়া’র সাথে একমত। এই অর্থে যে, ফাঁসির দন্ড পাওয়া মীর কাসেম আলী ছিলেন অত্যন্ত আবেগপ্রবণ।

আমি কোন বড় মাপের ও ‘তথাকথিত জাতির বিবেক’ ! (সাংবাদিক) নই!! বলতে পারি অনেক ক্ষুদ্র একজন মিডিয়া কর্মী। সাংবাদিকতা পেশায় এসেছি ভালোবেসে এবং প্রেরণা থেকে। সেই ১৯৯৬ সাল থেকে লেখালেখিতে হাতেখড়ি। অনেক ভালো চাকুরিও করার সুযোগ হয়েছে/করেছি। কিন্তু একধরণের নেশা আমাকে এই পেশায় আজো আবদ্ধ করে রেখেছে। ৯৬ থেকে ৯৮ পর্যন্ত টানা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করতাম। নিজ গ্রামের বাড়ি/এলাকায় ৯৬’র নির্বাচনপূর্বে ক্লাব গঠন/সভা-সেমিনার/ আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করেছি। যার স্বাক্ষি, আমার সহপাঠি/ছোট ভাই যাদের ছাত্রলীগ/যুবলীগ করতে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছি। আর যাদের অনুপ্রেরণায় ৯৫ থেকে একটু আধটু ছাত্র রাজনীতি করার অভিপ্রায় পায়েছিলাম; তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন, মরহুম কামাল ভূঁইয়া/মরহুম শাহজাহান চৌধুরী (শাহজাহান মামা)। আর সবচেয়ে বেশী অনুপ্রেরণা দিয়েছিলেন যুবলীগের কাজল ভাই। জানিনা তিনি কেমন আছেন।

আমি ‘১০ নং রায়পুর ইউনিয়ন’র ছেলে। কোন দল করেছি সেটা নতুন করে প্রমাণের কিছু নেই। ২ বছরের বেশী আর সক্রিয় দল করা হয়নি। শিক্ষা/পারিবারিক অবস্থান এবং সর্বপোরি গণমাধ্যমের সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার নেশা। দলীয় বাণিজ্য-চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি কখনোই আমাদের দিয়ে হবে না। ফলে তথাকথিত রাজনীতি আমি ছেড়ে দিই। পরিবারের ৫ ভোটারের মধ্যে তবুও ২০০৮ সালের সবশেষ নির্বাচনে মা-ছোট ভাই কে নৌকা ভোট দিতে উদ্ভুদ্ধ করি। কিন্তু প্রয়াত/মরহুম বাবাকে পারিনি। কারণ তিনি ছিলেন জাতীয় পার্টি ‘এরশাদ’র একনিষ্ঠ সমর্থক।

যাই হোক এবার আসি মূল কথায়। ১৯৯৮’র পর ঢাকায় চলে আসি। যায়যায়দিনের পর বিভিন্ন গণমাধ্যম খ্যাত-অখ্যাত দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকা/ম্যাগাজিনের পর ২০০৯ সালে বিটিভিতে অথিতি প্রযোজক বার্তা ( গেস্ট প্রডিউচার) হিসেবে যোগদানের পর ওই বছরই দিগন্ত টিভিতে যোগ দেই।

এর আগে প্রথম ১৬৭/২-ই, ইনার সার্কুলার রোড, ইডেন কমপ্লেক্স, মতিঝিলে অবস্থিত নয়াদিগন্ত পত্রিকা অফিসে যাই। দিগন্ত মিডিয়া করপোরেশনের ইন্টারভিউ বোর্ডকে মোকাবেলা করতে। সারিসারি লাইন। যতদুর মনে পড়ে সেই দিনের ইন্টারভিউতে আমি আর একজন নারী সাংবাদিক প্রার্থী দু’জনের টিভিতে কাজ করার কিছুটা অভিজ্ঞতা ছিল। আর বেশীরভাগই ছিলেন একেবারেই নবিন। লিখিত পরীক্ষার পর প্রতিযোগির সংখ্যা অর্ধেকে নেমে আসে। এরপর আবারো ডাক পাই ‘ভাইভা’র/মৌখিক পরীক্ষার। একই কার্যালয়ে। আমরা শুনেছি ইন্টারভিউ বোর্ডে মিডিয়া করপোরেশনের চেয়ারম্যান হিসেবে ‘মীর কাসেম আলী’র থাকার কথা। তবে উনার নাম শুনেছিলাম; কিন্তু তখনো তাঁকে চিনতাম না/দেখা হয়নি কখনো। যাই হোক একে একে ইন্টারভিউ দিয়ে বের হয়ে আসছেন সহপাঠিরা। প্রশ্ন করি কী জিজ্ঞেস করেছে ভাই/আপা? অনেকে উত্তরও দিয়েছেন যে যার মতো। পরবর্তীতে আমারা যে ৪জন মূলত চাকুরি পাই। তাদের মধ্যে ৩ জনের ইন্টারভিউ আগে হয়েছে। রুহুল আমিন তুহিন, হুসাইন মোহাম্মদ নাহিয়ান এরপর নাহিদ শিউলী তারপর আমার। তাদের আর বাকী পরিচয় দেবার কিছুই নেই।

পূর্বের ইন্টারভিউর পরও ২জন আমার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন। একদিনের আলাপচারিতায় ঘনিষ্ঠ হয়ে যাই। তাদের প্রশ্নের ধরণ যেনে আমি ভেতরে প্রবেশ করি। যাই হোক সালাম বিনিময় করে বসি। তখনো চিনতাম না বোর্ডর কাউকে। কারণ আমার কোন রেফারেন্সও ছিলো না। আমি ছিল ভিন্ন লাইনের লোক। সেই দিনের ইন্টারভিউ বোর্ডে (প্রথম দফায়) ছিলেন তৎকালিন ‘ডিটিভি’র হেড অব নিউজ আজম মীর শহীদুল আহসান, সিএনই রাশিদুল ইসলাম, নয়াদিগন্ত পত্রিকার নির্বাহি সম্পাদক সালাহউদ্দিন বাবর, ডিটিভি’র একজন উপদেষ্টা। আর দ্বিতীয় দফার ইন্টারভিউতে ছিলেন মিডিয়া করপোরেশনের পরিচালক সিব্বির মাহমুদ ও ডিটিভি’র নির্বাহী পরিচালক (সাবেক বিটিভি কর্মকর্তা) মোহাম্মদ হানিফ।

যাক ইন্টারভিউতে আমাকে প্রশ্ন করলেন, ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি কি না? আবার একজন জিজ্ঞেস করলেন আপনি কেন দিগন্ত টিভিতে কাজ করতে চান? জানালেন অনেকে তো এটাকে ‘জামায়াতের টিভি চ্যানেল’ বলে থাকে। আপনি কি শিবির করতেন? জবাবে আমি বললাম। প্রথমত আমার ৫ ওয়াক্ত নিয়মিত নামাজ পড়া হয় না। তবে, বেশীর ভাগই পড়ি। দ্বিতীয়ত আমি শিবির করি নাই, তাদের নিয়মও জানি না। উল্টো প্রশ্ন ছুঁড়ে দিই- শিবির করাটা কি সাংবাদিকতায় জরুরি? জবাবে বোর্ডের কর্তারা বললেন অফকোর্স না; তা কেন হবে? তবে, আপনি সত্য বলছেন এটা ভালো। কারণ অনেকে জামায়াতের চ্যানেল বলে চাকুরির জন্য শিবির দাবি করেন। কিন্তু শিবিরের আদর্শিক কোন প্রশ্ন জানেন না। এমন ও দেখেছি, তাই প্রশ্ন করা। তারা জানান, আমরা চাই পেশাদার সাংবাদ কর্মী। আমি বললাম ও আচ্ছা।

এরপর অপরজন বললেন, আমাদের এখানে সংবাদ বিভাগে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গির কোন মূল্য নেই। তবে, মুসলমান হিসেবে ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়া উচিত তাই না? এরপর বললাম আমি জি অবশ্যই। তারপর বললাম, আসলে একটি পরিচ্ছন্ন ধারার গণমাধ্যমে কাজ করতে চাই। আমার মনে হয়েছে আপনাদের চ্যানেলটি সেরকম। আমার ভয়েস টেস্ট নেয়া হলো। একটি প্রতিবেদন পড়তে বলা হলো। পড়লাম। বের হয়ে দেখি আমার সহপাঠি দু’জন এখনো অপক্ষেমান। জিজ্ঞেস করা হলো কি কি প্রশ্ন ছিল? আমি সব বললাম। একজন প্রতি উত্তরে বললেন, আপনার মনে হয় চাকুরি হবে না। আমি বললাম কেন? তিনি বললেন এমনিতেই। আমি বললাম ভাই কোন মিথ্যে তথ্য দিই নাই। হলে হবে, না হলে নাই।

এ বিষয়ে যার কথা না বললেই নয়। নয়াদিগন্তের হেড অব মার্কেটিং সাইফুল হক সিদ্দিকী। তাঁর সাথে আমার পূর্ব পরিচয়। অত্যন্ত ¯েœহ করতেন আমাকে। একটি ম্যাগাজিনের মিডিয়া সাইট আমি দেখতাম। সেই হিসেবে তার সাথে পরিচয়। তিনি ছিলেন অত্যন্ত স্মার্ট ও একজন দক্ষ মানুষ। আমি উনাকে বললাম। বড় ভাই অনেক কম বেতন বলে। জয়েন্ট করবো কি না? জবাবে তিনি বললেন, অবশ্যই কায়েস। তিন মাস পর। যোগদানের সুযোগ পেলাম। এর মধ্যে ‘চ্যানেল ওয়ান/বৈশাখী/বিটিভি’সহ অন্যান্য পত্রিকার বেশ কয়েকজন যারা ছিলেন, ঘোরতর জামায়াত বিরোধী ও পূর্ব পরিচত। তবে, সবাই ছিলেন অত্যন্ত পেশাদার, নির্লোভ এবং নির্দলীয় সাংবাদিক। চ্যানেলটিতে যোগদান করে ভালো একটা ‘সংবাদ টিমের’ সাথে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। কয়েকজন যে দলীয় ছিলেন না, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। বেশীরভাগই ছিলেন নিরপেক্ষ এবং দক্ষ সংবাদকর্মী। এরই মাঝে দু’একটা তিক্ত অভিজ্ঞতার শিকার যে হইনি; তা কিন্তু নয়! সেটা সব হাউজেই থাকে। তবে দিগন্ত টিভি ছিল অন্যান্য মিডিয়া হাউজ আলাদা। সবাই ছিলেন নিষ্ঠাবান এবং কর্মনিষ্ঠ।

আমাদের আগে এবং পরের যত নিয়োগ হয়েছে প্রায় সবক’টি নিয়োগের চূড়ান্ত পর্যায়ে চেয়ারম্যান হিসেবে ছিলেন মীর কাসেম আলী। কিন্তু আমাদের সময়ে বিদেশ থাকায় তিনি উপস্থিত হতে পারেন নি। পরে একদিন উনাকে দেখি। দীর্ঘদেহী একজন মানুষ। বার্তাকক্ষে প্রবেশ করলেন; নিমিষেই পুরো সাড়ে চারশ’ কর্মকর্তা-কর্মচারিতে ভরপুর চ্যানেলটিতে সুনসান নীরবতা ও কাজে মনোযোগি ভাব লক্ষ্য করলাম। মনে হয়তো এই কেমন চেয়ারম্যান? সবাই এত ভয় পায় কেন তাঁকে? আমার কর্মক্ষেত্রে ‘এমসি-চেয়ারম্যান’ হিসেবে মীর কাসেম আলীর সাথে ৩ বার দেখা হয়েছে। প্রথমবার সাংবাদিকদের সাথে নিউজ সংশ্লিষ্ট বোর্ড মিটিংয়ে। আর দ্বিতীয়টির কথা মনে নেই। তবে, তৃতীয় ও সবশেষ দেখা হয়েছে নয়াদিগন্ত কার্যালয়ে।

দিনটি ছিল ২০১০ সাল। ওইদিন ছিল দৈনিক নয়াদিগন্তের বার্ষিক মফস্বল সাংবাদিক/প্রতিনিধি সম্মেলন।

এক.
আমাকে অ্যাসাইনমেন্ট ডেস্ক থেকে বলা হলো আগামীকাল (সময় এবং তারিখ মনে নেই) নয়াদিগন্তের চেয়ারম্যান স্যারের একটি সভা আছে। আপনি কাভার করবেন। সম্ভবত সাঈদুল ইসলাম আর তাবিবুর রহমান তালুকদার ছিলেন অ্যাসাইনমেন্ট ডেস্কে। তাদেও একজন রেডিও টু’ডে আর অন্যজন রেডিও তেহরান/প্রেস টিভি থেকে আসা। যাই হোক। আমি জিজ্ঞেস করলাম ক্যামেরাম্যান কে? জানতে পারলাম। আমার অ্যাসাইনমেন্টের সহপাঠি ছিলেন (প্রোগ্রাম থেকে নিউজে আসা) শাহিদুর রহমান। সে সময়ে উনার সাথে তেমন হৃদ্যতা গড়ে উঠেনি।

দুই.
যথারীতি সকাল দশ’টায় অনুষ্ঠানস্থলে হাজির হলাম। নয়াদিগন্তের বিভিন্ন জেলার প্রতিনিধিদের অনেকেই রিপোর্ট করার কারণে চেনার ছলে কথা ও কুশল বিনিময় হলো। এরই মধ্যে থেমে থেমে চললো প্রতিনিধিদের অভিযোগ আর প্রত্যাশা-প্রাপ্তির ক্ষোভ ও অভিমানের বক্তব্য। অবশ্য তা ছিল বার্তা বিভাগের শীর্ষ কর্তাব্যক্তিদের সামনে। মাসুমুর রহমান খলিলী। তিনি উপস্থিত প্রতিনিধিদের বিভিন্ন অভিযোগের জবাব/সীমাবদ্ধতার কথা জানিয়ে বললেন, সব কিছু ‘চেয়ারম্যান-এমসি’ স্যারের সামনে উত্থাপন করবেন। আমি তো নিশ্চুপ এ কোনে বসে।

তিন. 
বেলা আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে প্রতিনিধি সম্মেলনের প্রধান অতিথি হিসেবে হাজির হলেন দিগন্ত মিডিয়ার করপোরেশনের চেয়ারম্যান মীর কাসেম আলী। মুহুর্তে তুষের আগুনের মতো ধাউ ধাউ করে চলতে থাকা উত্তপ্ত বাক্য-বিনিয়ময় প্রশমিত হয়ে গেলো মোমের আগুনের মতো। পুরো মিলনায়তন তখন থমথমে অবস্থা আর সুনসান নীরবতা। সবার মুখে ভদ্রতার ছাপ ফুটে উঠলো। আগত প্রতিনিধিদের শান্তভাব দেখে মনে হলো অভিযোগ সব কর্তাব্যক্তিদের উপর; চেয়ারম্যানের উপর নয়। আমি অবাক হলাম। এটা কি করে সম্ভব? এই ব্যক্তিটি ‘যাদুকর’ না কি?

চার.
তাকিয়ে দেখলাম। এর আগে কয়েকজনের অভিযোগ ক্যামেরাম্যানকে শাহিদুরকে রেকর্ড করতে বললাম। চেয়ারম্যান এক হলেও পত্রিকা আর টিভি ব্যবস্থাপনা পুরোপুরি ভিন্ন ছিল। শুরুতেই সবাইকে সালাম বিনিময় শেষে বিসমিল্লাহ বলে কোর’আনের একটি আয়াত পাঠ করলেন মীল কাসেম আলী। তাও আবার ব্যবসা রিলেটেড। এরপর একে একে প্রায় ২৫ থেকে ৩০জন প্রতিনিধির নাম ধরে সম্বোধন করে বললেন, তোমার এবারের রিপোর্ট ভালো হয়েছে। অন্যজনকে বললেন তুমি এবার খারাপ করলে কেন? গত বছর অমুক ভালো করেছে/তমুক কেন পিছিয়ে গেলো? ইত্যাদি। আবার যারা সংবাদ/সোর্স প্রতিযোগিতা ব্যর্থ ছিলেন, তাদের ভরসাও দিলেন। যারা ভালো করেছেন, তাদের অনুপ্রাণিত ও উৎসাহিত করলেন। কারো কোন অভিযোগ দেখলাম না। উল্টো সবাই হাসিখুশি মনেই জবাব দিচ্ছিলেন। ভাবলাম; একটা ব্যক্তির উপস্থিতির আগে এবং পরের পরিস্থিতি আকাশ-পাতাল ব্যবধান! এটা কি কওে সম্ভব? পুরো চিত্রটি আমি নীরবেই পরখ কওে গেলাম। তাই এই লেখাটিও কেবল লিখেই যাচ্ছি। জানিনা না শেষ হবে কি না? তবে মুল বিষয়গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করছি।

পাঁচ. 
এরপর বক্তব্যের পালা। মীর কাসেম আলী যখন বক্তব্য দিচ্ছেন। একেকটি কোর’আনের আয়াত পাঠ করছেন। আর তার স্বপ্নের কথাগুলো খুব সুন্দর করে তুলে ধরছেন। আগেই বলেছি। তাঁর মেয়ের কথা। যিনি বলেছিলেন আমার বাবা আবেগপ্রবণ মানুষ। একেবাওে সত্যি কথা। সেদিন আমি দেখেছি। তিনি তাঁর দীর্ঘ প্রায় ১ ঘন্টার বক্তব্যে কেঁদেছেন/হাসিয়েছেন আবার অনুপ্রেরণাও যুগিয়েছেন। তুল ধরেছেন, বাংলাদেশর অপসংস্কৃতি ও আগামী প্রজন্মের মাঝে সুষ্ঠু, সত্য ও সুন্দরের একটি লক্ষ্য নিয়ে গণমাধ্যম/মিডিয়া করপোরেশন গড়ার কারণ। তুলে ধরেছেন দেশ নিয়ে তাঁর আগামীর স্বপ্নের কথা।

ছয়. 
মীর কাসেম আলীর পুরো বক্তব্য আমি ফেল ফেল করে তাকিয়ে হজম করেছি। আমার সাথে থাকা ক্যামেরাম্যান ‘শাহিদুর রহমান’ উনাকে দেখলাম অঝোরে কাঁদছেন আর ‘সেভেন্টি ফোর ক্যামেরার’ ভেতরে থাকা পুরো ‘মিনিডিভি’ ক্যাসেট’ ফিতা খরচ কওে যাচ্ছেন রেকর্ড বাটন চেপে। সেই দিনই মূলত মীর কাসেম আলী কেমন স্বপ্নদ্রষ্টা ও মানুষ গড়ার কারিগর; তা বুঝতে পেরেছি। একই সাথে এত বড় বড় প্রতিষ্ঠানের একজন দক্ষ কারিগর ও উদ্যোক্তাকে দেখেছি পুরো অহঙ্কারমুক্ত সজিব ও প্রাণবন্ত। যিনি ছিলেন একজন সত্যিকারের সফল উদ্যেক্তা। আপ্লুত হয়েছি তাঁর মেধা, দুরদর্শীতা ও স্বপ্নের মহানুভতা এবং উদারতা দেখে।

সাত. 
অবশেষে শত শত অভিযোগ আর অভিমান ভরপুর প্রতিনিধি সম্মেলনের সমাপ্তি হয়। উচ্ছ্বসিত হাসি, প্রাণের উচ্ছ্বলতা আর বুকভরা স্বপ্ন দেখতে পাই প্রতিনিধিদের চোখে-মুখে। শুরুতেই যেসব প্রতিনিধিদের দেখলাম ক্ষুব্ধ, ত্যাক্ত-বিরক্ত; মীর কাসেম আলীর বক্তব্য শেষে তাদের চোখ ভরে যায় ‘হাসি আর আনন্দে’। যাতে কোন অর্থ কিংবা মিথ্যার প্রতিশ্রুতি ছিলো না। মীর কাসেম আলী’র দেখা স্বপ্নের ভাগিদার হতেই হয়তো সবাই নতুন করে অনুপ্রেরণা পেয়েছেন।

আট.
এরই মধ্যে যোহরের আযান পড়লো। সবাই এক সাথে নামাজ আদায় করলেন। আমরাও শরীক হলাম। প্রতিনিধিদের জন্য ‘প্যাকেটজাত’ দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা ছিল। বিকেলের দেশের সংবাদ বুলেটিনে নিউজ ধরাবো বলে নামায শেষে না খেয়েই আমরা রওনা দিলাম। সম্ভবত চার তলা ভবনের ‘ইডেন কমপ্লেক্স’র একটি সিঁড়ি না পেরুতেই একজন ডাক দিলেন। এই যে ‘ডিটিভি’ ভাইয়েরা কে? শাহিদুর রহমান, তিনি বললেন আমরা। সম্ভবত চেয়ারম্যান সাহেব তথা মীর কাসেম আলীর পিএস ছিলেন জনৈক ব্যক্তি। নাম মনে নাই। তিনি বললেন, ‘চেয়ারম্যান স্যার আপনাদের ডাকেন’। ভয় পেয়ে গেলাম। ভাবলাম কি আবার ভুল করলাম!

নয়.
নয়াদিগন্ত প্রত্রিকা অফিসের বিশাল বোর্ড রুম। সেখানে প্রবেশ করলাম। মীর কাসেম আলী হাসিমুখে সালাম গ্রহণ করলেন। তাঁর বাম পাশেই বসা ছিলেন উনার একজন উপদেষ্টা। সুন্দর করে। ভদ্রলোকের নামটা মনে নেই। আমাদের বসতে বললেন। আমি আর ক্যামেরাম্যান শাহিদুর রহমান; দু’জনে উনাদের দু’জনের মুখোমুখি বরাবর বসলাম। বললেন, তোমারা তো দুপুর খাবার খাওনাই। বসো এক সাথে খাবো। মনের ভয় অর্ধেকটা কেটে গেলো। এত বড় প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান! তার উপদেষ্টা’সহ বসে আমাদের মতো ক্ষুদ্র দু’জন কর্মচারিকে সাথে নিয়ে খেতে বসলেন। ভাবগাম্ভির্য আর সুঠাম দেহের অধিকারী মানুষটির মনটাও ছিল সুঠাম। সেটা সেই দিনই প্রথম বুঝতে পারলাম। নিরহংকার আর কতটা নির্লোভ ও একজন দক্ষ ব্যবস্থাপক/দিক-নির্দেশক এবং স্বপ্ন পরায়ণ হতে পারে একজন মানুষ; তাও বুঝতে পারলাম।

দশ.
যথারীতি খাবার এলো। যতদুর মনে পড়ে ‘মুরগি রোস্ট আর ডিম আর সম্ভবত সবজি/ডাল’ ছিল। এক সাথে খাওয়া শুরু করলাম। এরই মধ্যে একটা কথা তুললেন। প্রথমে তিনজনকে উদ্দেশ্য করে বললেন। “আচ্ছা আওয়ামী লীগ থেকে আমার কাছে অফার আছে। বিএনপি ছেড়ে তাদের সাথে ঐক্য করার। ৮৫ আসন দিবে। আরো সুযোগ-সুবিধা। সরকারের মন্ত্রীত্ব থাকবে কয়েকজন। দলের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে আমার সাথে কথা বলেছে। কেমন হবে? আামাদের যাওয়া উচিত হবে কী?”

আমি অধম চুপচাপ নীরবে শুনলাম। শাহিদুর রহমান (ক্যামেরাম্যান) তিনিও মুচকি হাসছেন। এরপর বাম বসা উপদেষ্টা সাহেবকে উদ্দেশ্য করে বললেন আপনি আগে বলেন। আপনাকে দিয়ে শুরু করা যাক।

উপদেষ্টা: কি যে বলি স্যার ...ইত্যাদি। তিনি বিভিন্ন ভাবে কথা বলতে গেলেন।

মীর কাসেম আলী: বড় করার দরকার নেই। আপনার অভিমত কি? এক কথায় বলেন।

উপদেষ্টা: আমি জানতে চাই কতটা নির্ভর করা যায় আওয়ামী লীগকে?

মীর কাসেম আলী: দলের হাইকমান্ড থেকে যোগাযোগ হয়েছে। প্রয়োজনে শেখ হাসিনা পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয়’সহ যুক্তরাষ্ট্রে বসে চুক্তি হবে। এটা অনেক বড় একটি ডিল। কিন্তু আমার কথা কি জামায়াত মানবে! কারণ জামায়াত তো এককন সীদান্ত কিংবা ব্যাক্তি নির্ভর দল নয়।!!

উপদেষ্টা: তাও ঠিক স্যার। তবুও আপনি চিন্তা করেন। দেখেন আপনার চিন্তার সাথে আমাদের চিন্তার অনেক ব্যবধান হবে। আমি বিষয়টির পুরোপুরি উত্তর দিতে পারবো না।

মীর কাসেম আলী এরপর মৃদু হেসে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন। তোমার নাম কি যেন? সাথে সাথে নিজইে বললেন, ‘কায়েস’ তুমি। তুমি তো ছাত্র লীগ করতা। কি? বিশ্বাস করা যায় তোমার দল কে.....?

আমি: স্যার আমি তো অনেক আগে ছাত্র জীবনে করতাম। ৯৮’র পর ছেড়ে দিয়েছি। এখন বলতে পারেন ভোটাধিকার প্রয়োগ করি। আমি তো জামায়াত আর আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক পলিসি বুঝিনা।

মীর কাসেম আলী: তবুও মিয়া। এখনতো সাংবাদিকতা করো। জামায়াতের নিউজও করো। আওয়ামী লীগ/বিএনপি’র নিউজ করো। আওয়ামী লীগের সাথে জোট বাঁধলে জামায়াত কতটা লাভবান হবে?

আমি: আচ্ছা আওয়ামী লীগের যারা অফার দিয়েছে, তারা প্রকাশ্য ঘোষণা দিবে?

মীর কাসেম আলী: এখনো নয়। তারা আগে সময় চাইছে। জোট গড়ার পর। আগামী নির্বাচন ২০০৮’র পরবর্তী নির্বাচনের আগে ঘোষণা দিবে।

আমি: কিন্তু এখন আনুষ্ঠাকি প্রেস ব্রিফিং না করলে কতটা নির্ভর করা যায়? আর জামায়াত কতটা লাভবান হবে সেটা আমি ভালো বলতে পারবো না।

মীর কাসেম আলী: মুসকি হাসলেন।

শেষ প্রশ্ন- এবার ক্যামেরাম্যান শাহিদুর রহমান। তুমি কি বলো? এখানে একটি কথা বলে নেই শাহিদুর রহমান। তিনি হয়তো আগ থেকেই মীর কাসেম আলীর অন্ধ ভক্ত। অনেক জানাশোনা ছিল হয়তো। তার চোখে মুখে শ্রদ্ধার আর ওই মফস্বল সাংবাদিক/প্রতিনিধি সম্মেলনের অঝোওে কান্না দেখেই বুঝতে পেরেছি।

শাহিদুর: স্যার। ৯৬ সালে আওয়ামী লীগ কি দিয়েছে? জোটবদ্ধ আন্দোলন করেও তো লাভ হয়নি।

মীর কাসেম আলী: রাজনীতিতে উত্থান-পতন থাকবে। আছে। তবে,‘ দেশ ও জনগণের স্বার্থ বিরোধী’ এমন কোন কাজ আমি/আমরা করবো না। দেখি কি হয়।

নিউইয়র্কে এখন ভোররাত ৪.১২ বাজে লেখা শুর করেছি ১২ টা থেকে। টানা লিখে যাচ্ছি। মীর কাসেম আলীর সেই দিনের কথার ‘কোড-আনকোড’ তুলে ধরার চেষ্টা করেছি হুবহু। আমার মস্তিস্ক যদি ঠিক থাকে। আমি যদি আমার পরিবারের সদস্যদের চিনে থাকি। তবে কথাগুলো সবই সত্যি। হয়তো দু’একটি শব্দ প্রয়োগ মীর কাসেম আলী’র ভাষাগত কিংবা বাক্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে সামান্য এদিক-সেদিক হতে পারে। কিন্তু যে বিষয়টি তিনি বলেছেন। সেটা আমি (ডিআরইউ) আড্ডায় বেশ কয়েকজনসহকর্মীদের সাথেও আলাপ করেছি। ২০১০ সালের ওই দিনই ছিল মীর কাসেম আলী’র সাথে আমাদের শেষ দেখা। একই সাথে জীবনের প্রথম ‘সামনা-সামনি’ বসে কথা বলা। মাত্র চারজনের মিলে একসাথে দুপুরের খাবার খাওয়া।

আমার মনে হয় কারো অজানার কথা নয়! সেই সময়ে বাংলাদেশের মূলধারার গণমাধ্যমে নিয়মিত খবর প্রকাশিত হতো বিভিন্ন শিরোনামে। ‘জামায়াতে ভাঙনের শুর’/‘মীর কাসেম আলীর পাওয়ার পয়েন্ট’/‘আধুনিক জামায়াত গঠনে দ্বিধাবিভক্ত জামায়াত’ ইত্যাদি। সাবেক যুগান্তর বর্তমান প্রথম আলোর সেলিম জাহিদ/আমাদের সময়ের দুর্ঘটনার শিকারে নিহত দিনেশ দাস। এই দু’জন জামায়াত নিয়ে সপ্তাহে অন্তত একটি হলেও সংবাদ প্রকাশ করতেন। তবে, সেলিম জাহিদ ছিলেন অত্যন্ত পেশাদার। আমি যে কথাগুলো বলেছি সেলিম জাহিদ উনি খবর সংগ্রহের সময় হয়তো তথ্য পেয়েছেন, গোপনে জামায়াত-আওয়ামী লীগ জোটের একটি প্রক্রিয়া হয়েছিল। তিনি ভালো বলতে পারবেন। সে সময়ে প্রয়াত সাংবাদিক (দিনেশ দাস)। যিনি জামায়াতের টাকা নিয়ে পূজা’র অনুষ্ঠান করতেন। তিনিও একদিন পল্টনে আমাকে বললেন, তোমাদের মালিক তো জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের বাদ দিয়ে নতুন ও আধুনিক নেতা-কর্মীদের নিয়ে সরকারের সাথে জোট গড়তে যাচ্ছে। আমি এখনো ভুলিনাই। পল্টন মোড়ে সে দিন হরতালের ডিউটি করছিলাম। ক্যামেরাম্যান ছিলো রুমেল।

সত্য-মিথ্যা জানিনা। তবে, এটা অবিশ্বাস করার মতো কিছু নয়। কারণ বঙ্গবন্ধু হত্যাকারিদের অন্যতম এবং জ্বলন্ত প্রমাণ থাকার পরও হাসানুল হক ইনুদের যদি শেখ হাসিনা জোটে নিতে পারেন। নিজের পিতার হত্যার কথা ভুলে নৌকার উঠার সুযোগ করে মন্ত্রীত্ব দিতে পারেন। সেখানে জামায়াদের মতো একটি সুসংগঠিত দল জামায়াতকে নিতে পারলে তো আরো ভালো হতো। তাহলো অন্তত ২০১৪’র ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচন আর এরশাদ নিয়ে এত তামাশা করা লাগতো না।

যুদ্ধাপরাধের বিচার হচ্ছে ভালো কথা। কিন্তু স্বাধীনতার ৪৫ বছরে এসে। সত্য/মিথ্যার মিশেলে ফাইল ফুটেজের মাধ্যমে গণমাধ্যমের অব্যাহত খবর হত্যা, খুন আর ধর্ষণের যে মহাযজ্ঞ চালিয়েছে নিজামী-গোলাম আজম গং’রা । এমন সংবাদ যে ভুল প্রমাণীত হয়েছে রাতের আঁধারে মাটি দিয়েও তাদের গায়েবানা জানাজা লাখো মানুষেল ঢল থামানো যায়নি। বরং এক শাহবাগ আন্দোলন দিয়ে দেশকে কেবল বিভক্তির দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে। মাঝখানে জামায়াতের মত দলকে বিশ্বদরবারে ও দেশের জনগণের কাছে আরো -পরিচিত করিয়ে দেয়া হয়েছে।

অপ্রিয় হলেও সত্য। যেটা আমি নিজেও অতীতে দেখি নাই। ৯৬-৯৮ এই দুই বছর রায়পুর নিজের এলাকায় ছাত্রলীগ করার সময়েও এত জামায়া-শিবির কর্মী দেখি নাই। বরং এখন দেখি কয়েকগুন বেড়েছে। এভাবে চলতে থাকলে আরো বাড়বে-বৈ কমবে না। কারণ মীর কাসেম আলীরা যে স্বপ্ন দেখাতে সক্ষম হয়েছেন, স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপিতেও ক্ষমতার লোভ ছাড়া ভালো ও ত্যাগি নেতার সংখ্যা খুব কম লক্ষ্য করা গেছে। যারা ত্যাগি আছেন। তারা কেউ জিয়াউর রহমান আবার কেউ বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কারণে। সফলতা কোনটাকে বলে? ক্ষমতার লোভে দল করা না কি আদর্শিক দল করা। হোক সেটা বঙ্গবন্ধু/জিয়াউর রহমান কিংবা স্বাধীনতা বিরোধী হলেও জামায়াতের আদর্শ। আর রাম-বামদের আদর্শতো এখন বলতে গেলে তলানিতে।

তৎকালিন প্রকাশিত ‘জামায়াতে ভাঙনের শুর/‘মীর কাসেম আলীর পাওয়ার পয়েন্ট অরিয়েন্টেশন’ ইত্যাদি খবরই কি প্রমাণ করে? ঠিক সে সময়ে ভিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহার করে ‘মীর কাসেম আলী’র বিদেশ সফর। বাংলাদেশের গণমাধ্যমের খবরে ফলাও করে প্রচার দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন মীর কাসেম। ইত্যাদি নিয়ে কত মাতামাতি। পরবর্তীতে মীর কাসেম আলীল ফেরত আসা। দুবাইতে বসে চ্যানেল আইকে সাক্ষাতকার। দাবি করেন ‘আমি পালি আসেনি, দেশেই ফিরে যাবো। (ভিডিও সংযুক্ত)/লিংক: 
https://www.youtube.com/watch?v=6HAWxOsnRmo

একই সাথে তৎকালিন আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামের সরাসরি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব। মীর কাসেম আলী অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধি নন। এসবই কী প্রমাণ করে? (ভিডিও সংযুক্ত)/লিংক: 
https://www.youtube.com/watch?v=ahGCqdHUGCQ

তাই ভাবলাম যুদ্ধাপরাধ বিষয়ে কোন কিছু লিখবো না। কিন্তু না। মীর কাসেম আলীর সেই দিনের খাবার টেবিলের কথা আর কামরুল ইসলামের স্টেটমেন্ট...! এছাড়া পরবর্তী সব রাজনৈতিক নাটকই প্রমাণ করে; ক্ষমতার কাছে দেশ কিছু নয়। আমরা সবাই চেতনার স্বর্গে আছি। যখন মীর কাসেম আলী ৮৫ আসন আর মন্ত্রীত্বকে ছুড়ে ফেলে মৃত্যুকেই আলিঙ্গন করলেন। তখনই প্রমাণীত হয়ে যায় অতিরিক্ত জামায়াত বিরোধী আমাদের দেশকে আরো সঙ্কেটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে/দিয়েছে।

যে দেশের জন্য যুদ্ধ করে বঙ্গবীর উপাধি পেয়েও কাদের সিদ্দিকীরা বনে যান রাজাকার! সে হিসেবে আমরা তো কিছুই না। আমার এখনো মনে আছে, যে লোকটার প্রতিষ্ঠানে আমরা দল না করেও, জামায়াত বিরোধী মনোভাবাপন্ন সাংবাদিকরা কাজ করেছি। কখনো আমাদের সংবাদ বিষয়ে কোন কিছু চাপিয়ে দেয়া হয়নি। সেই লোকটাকে খারাপ বলি কী করে? যা আমি স্বচক্ষে দেখিনি। কারণ মুক্তিযুদ্ধের নামেও অনেকে হত্যা, খুন, জমি দখল আর মুরগি চুরি করেছেন! এরকম অসংখ্য ঘটনার ঘটেছে। প্রমাণ আছে। আজকে আমাদের রায়পুওে রাজাকার ও শান্তি কমিটির নেতারা বংশধরেরা ও ক্ষমতার কারণে চেতনার সাথে আছেন। নাম নাই বা বলি। বরং ছাত্র জীবন ও পেশাগত জীবনে চামচামি আর তোষামোদির সুযোগ থাকা সত্ত্বেও করিনি।

৯৬’তে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল। ২০০৮’এ ভোট দিয়েছি। ভোট নিয়ে সহকর্মীদের সাথে কত শত তর্কে লিপ্ত হয়েছি। মনে হচ্ছে আসলে তখন আবেগি আর অন্ধ ছিলাম। ছিলাম অজ্ঞ। এখন বুঝতে শিখেছি। ভারত আমাদের বন্ধু কখনোই ছিল না। আগামীতে হবে না। কারণ তারা যে টুকু করেছে নিজেদের স্বার্থের জন্য। যার প্রমাণ এখন আমরা পাচ্ছি। মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি ওসমানির কোন খবর নাই। মূল্যায়ন নেই জাতীয় চার নেতার। কেবল বঙ্গবন্ধুকে বিক্রি করে আর তার সম্মানহানি করে উল্টো চলছে ক্ষমতার বাণিজ্য। আর জামায়াত নেতাদের ভারত বিরোধী মনোভাব আজকে মৃত্যুদন্ড।

সময় মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকরের পর একজন সাংবাদিক সহকর্মী বাংলাদেশ থেকে এই লেখাটি ইনবক্স করেছেন (স্ক্রিনশর্ট সংযুক্ত)। যেহেতু তিনি ইনবক্স দিয়েছেন। সেহেতু তার নামটা নাই বা বললাম। তিনি লিখেছেন, “৪৪ বছর আগের হত্যা, ধর্ষণ, মানবতা বিরোধী অপরাধের দায়ে যাদের ফাঁসির কাষ্ঠে ঝোলানো হয়েছে , আমরা নতুন প্রজন্ম তাদেরকে একদিনের জন্যও এমন কোন অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত হতে দেখলাম না। আর যারা ৪৩ বছর পরে হঠাৎ করেই এই অভিযোগগুলো করছে, তাদের নেতা-কর্মীদেরই দেখেছি ধর্ষণে সেঞ্চুরি করতে। ব্যাংক ডাকাতি করতে, লুটপাট করতে, অস্ত্রবাজি-বোমা বাজি করতে। ক্ষমতার দম্ভে নির্দ্বিধায় হত্যা করতে, মানুষের লাশ টুকরা টুকরা করতে, লাশের উপর নৃত্য করতে। আমরা নতুন প্রজন্ম কি বিশ্বাস করব? যা নিজ চোখে দেখছি সেটা? নাকি যা গল্পের মত..? এর চেয়ে বেশি লেখার মত মন নাই।”

সাংবাদিক সহকর্মীকে বলছি। ভাইজান আপনি যথার্থই বলেছেন। মীর কাসেম আলীরা স্বপ্ন দেখাতে পেরেছেন। তাই বলেই শত প্রতিকূলতায় তাদের পক্ষে এত মানুষ। গায়েবানা জানাজায় মানুষের ঢল। ধর্ষণ-আর লুণ্ঠনকারিদের জানাজায় জন¯্রােত আর জনসমুদ্র দেখে দ্বিধান্বিত হয়ে পড়েছি। কোনটা ঠিক? আজকে তনু, মিতু, আর শত শত রিশাদের লাশ। ঘরে ঘরে ঐশিদের জন্ম। সোহরোওয়ার্দী উদ্যান, বোটানিক্যাল গার্ডেন আর হাতির ঝিলে জোড়া কবুতরের সারি সারি আড্ডা। অশ্লিলতার এক অভয়ারণ্য। অপরদিকে, পিতা-সন্তানকে, সন্তান-পিতাকে, মা-সন্তানকে আর সন্তান-মাকে হত্যা। অর্থলোভ, নারী লোভ, সামাজিক অবক্ষয়, আইনের শাসন ভুলন্ঠিত। অব্যাহত বিরল গণতন্ত্রের আদলে অসুস্থ রাষ্ট্র ব্যবস্থা, ভর্তি বাণিজ্য, টেন্ডার বাণিজ্য নিয়োগ বাণিজ্যের বিপরীতে প্রতিবছর বস্তায় বস্তায় পাশের মিছিল। আর বেকার ও চাকরিহীন তরুণ প্রজন্ম হতাশা এবং নিরুপায় হয়ে আজকে জঙ্গিবাদ আর সন্ত্রাসবাদের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। এ দায় কার? চেতনার তেলে উপড়ে পড়া লাগামহীন এসব অসামাজিক কার্যকলাপ থেকে কে ফেরাবে আমাদের। আগামী প্রজন্মকে স্বপ্ন দেখাবে কে? সেই দিকে তাকিয়ে আছি থাকবো।

পরিশেষে এই টুকু বলবো। সত্য কখনো চাপা থাকে না। জামায়াত নেতারা (যা চোখে দেখেনি ) অভিযুক্ত ঘটনায় জড়িত থাকলে উপর ওয়ালা তাদের ন্যায় বিচার করবেন। আর নিরাপরাধ হলে অবশ্যই তারা সেই প্রতিদানও পাবেন। এটাই বাস্তবতা। কারণ মৃত্যুর পরও একটা জীবন আছে। মুসলমান বলে এখনো বিশ্বাস করি। আর যারা মিথ্যা আশ্রয় নিয়ে বিচার করে থাকেন তাদেরও একদিন সত্যের মুখোমুখি হতে হবে। এটাই ইতিহাসের শিক্ষা।

১২ টা থেকে একটানা লিখতে লিখতে সাড়ে ছয়’টা বেজে গেছে। মাঝখানে ৩০ মিনিটের বিরতি ছিল রাতের খাবার। আল্লাহ আমাদের দেশে শান্তি ফিরিয়ে দিবেন। এই প্রত্যাশা।

শিবলী চৌধুরী কায়েস / Sibli Chowdhury Kayes
নিউইয়র্ক/যুক্তরাষ্ট্র
৪ সেপ্টেম্বর/রোববার
প্রথম প্রহর/সময় ৬.৩০